কেউ তোমাকে পছন্দ করবে এই আশায় নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলো না...তুমি যেমন আছ তেমনই থাকার চেষ্টা কর... যে তোমাকে সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসবে সে সত্যিকারের তোমাকেই ভালোবাসবে...

Definition List

আবেগ, লাভ কানেকশান - গল্প



ক্লাসে ঢুকেই
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাজ
এই খানে তো শুধু মেয়ে আর মেয়ে
মেয়েদের পড়ার ব্যাচ নাকি এটা ?
পাশ থেকে মাথা টা গলিয়ে দেখলো রিহান
<>
রিহান আর রাজ
দুজনে বেষ্টফ্রেন্ড...
এছাড়া কলেজে
জান্নাত,রিহান,রিতু ,রাজ চারজনে
যেন একে অপরের প্রাণের বন্ধু
.
যাহক পরে,
-
দোস্ত কোথায় এসে পড়লাম ? (রাজ ফিসফিসিয়ে বলে)
-
তাই তো দেখছি
আমার কিন্তু ভালোই লাগছে
বেশ মজা হবে
.
-
রিহান ন্যা
তোর মশকারা করার স্বভাব গেল না ?
জান্নাত আর রিতু কোথায় দেখতো,
দুই বজ্জাতি না বলেছিলো
এইখানে ছেলেও পড়ে ?
-
দেখছি না তো বাপ ওদেরকে
-
তো ক্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছিস যে?
ফোন দে না?(রিহান)
-
ফোন দে না মানে ?
তুই ফোন দিতে পারছিস না ?
ব্যালেন্স কি সব আমার মোবাইলেই আছে নাকি ?(রাজ)
-
আমার নাই তাই বললাম
দে না
*
>
ক্লাসের সবাই
হা করে তাকিয়ে আছে
লাবণ্য, সিনথীয়া,হিমি, লতা,রুপা,মায়া,সাথী সবাই ফিসফিস করছে নতুন দুই ছেলেদের দেখে
এরা হলো ক্লাসের ফার্স্ট বেঞ্চার
সবসময় ভালো করে
.
যাহক পরে
রিহান ফোন দিল,
-
হ্যালো রিতু, আমি রিহান
-
তুই রিহান হলেও
আমি রিতু না
আমি জান্নাত
বল কি হইছে???
-
আমি জান্নাত হুহহ!
জান্নাত জাহান্নাম বাদ দে
আছস কোথায় তোরা ? আসবি না?
.
-
নারে রিহান
আজ আসবো না
আজ রিতুর কি একটা অনুষ্ঠান আছে
যাবে না তাই আমিও যাবো না .
-
কেন?
রিতু মরে গেলে কি তুইও মরে যাবি নাকি ?
-
কুত্তা
ফাজলামি অফ কর যা ক্লাসে বয়
স্যার কে বলা আছে
-
প্লিজ আই না বাপ
-
রিহান????
যা ক্লাসে বস্
-
কিন্তু এইখানে তো সব মেয়ে,
সব পেত্নীর দল
-
ফ্যাচর ফ্যাচর অফ করে ভিতরে বয় রাখলাম
.
>
রাজ আর রিহান
দুই বেষ্টফ্রেন্ড ভিতরে ঢুকে এক কোণায় একটা সীটে বসতেই,
ক্লাসের বুদ্ধিমতি ছাত্রী
লাবণ্য উঠে দাঁড়িয়ে সামনে এসে বললো,
-
এই এই
এটা মেয়েদের সীট
উঠে যাও এইখান থেকে
অন্য জায়গাই বসো
.
-
তবে ছেলেদের জায়গায় কোনটা ?
-
আমি ছেলে নাকি ?
নিজে থেকে খুঁজে গিয়ে বসো
বলে হাসতে হাসতে
লাবণ্য গিয়ে নিজের সীটে বসলো
.
>
রাগ দেখিয়ে
রাজ আর রিহান ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলো
***
যাহক
একটুপরে জান্নাত আর রিতু আসল
পরে চার বেষ্টফ্রেন্ড
একসাথে ক্লাসে ঢুকতেই ফোড়ন কাটলো লাবণ্য,
-
এসেছে দেখ
হাফ লেডিস দুটো
.
>
রিহান প্রায় তেড়ে গিয়ে বললো,
-
হাফ লেডিস কাকে ডাকলা?
-
তোমার এতো জ্বলছে কেন ?
সন্দেহ হচ্ছে??
.
>
বলেই লাবণ্য হাসতে লাগলো
হঠাৎ রিহানের এই হাসি দারুণ ভালো লাগছে
অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়েই আছে
.
>
মুহূর্তেই রাজের ডাকে বাস্তবে ফিরে এলো রিহান,
.
-
এই রিহান
হারামজাদা বয়না,
মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন ?
.
রাজ কথাটি বলেই
লাবণ্যকে বললো,
-
লাবণ্য
তোমার খাতা টা দিতে পারবা ?
স্যার বলেছে তোমার খাতা থেকে আগের ম্যাথ গুলো তুলে নিতে
আর কিছু না বুঝলে যেন তুমি বুঝিয়ে দাও .
-
এহ!
আমার ঠ্যাকা পড়ছে তোমাকে বুঝায় দেয়ার জন্য ?
স্কুল খুলেছি নাকি ?
-
এতো দেমাগ কিসের ?
একটু ভালো করে সময় নিয়ে পড় বলে কি এতো দেমাগ দেখাতে হয় ?
তোমার খাতা তুমি খাও গা
-
দেখ রাজ একদম বেয়াদবি করবা না
.
>
লাবণ্য আর রাজের ঝগড়া চলতেই থাকে
>
আর রিহানও ফিদা হতে থাকে লাবণ্যের উপর
.
লাবণ্য অবশ্য
রাজকে খাতা না দিলেও বা হেল্প না করলেও
রিহানকে মাঝে মাঝে করে
ভালই লাগে ওর..
.
<>
একদিন রাস্তায়
লাবণ্যের সাথে রিহানের দেখা
দুইজন হাটতে হাটতে বাসায় যাচ্ছিলো
>
হঠাৎ রাস্তায়
আবার তার ফ্রেন্ড জান্নাতের সাথে দেখা
.
জান্নাত কিছু বলার আগেই
রিহান ওকে টেনে নিয়ে এক কোনায় এনে বললো,
-
দেখ জান্নাত
কিছু বলিস না প্লিজ
ওকে আমার ভালো লাগে ,
আর কিছু বলিস না
.
>
আজ লাবণ্যের
বার্থডে ,
ক্লাসের সবাই সেলিব্রেট করছে
কেক কাটার পরে
রিহান সাথে আনা গীটারে গান ধরলো , সবাই হাত তালি দিচ্ছে
.
আর রাজ
বাইরে বের হয়ে এক কোণায় বসে একটা সিগারেট ধরালো,
এক টান দিতে না দিতেই
রিতু পাশে এসে দাঁড়িয়ে একটা ঝাঁকুনি দিলো,
-
কিরে কোনায় কি রে?
-
ধুর রিহানের ওই গান আমার আগের শোনা
তাই এইখানে এসে বসেছি
-
বল সিগারেট খেতে এসেছি
এই ছাই পাশ গুলো না খেলে হয়না ?
-
সবার জন্য সব কিছু এক না রিতু তোমার জন্য তোমার একটা কলমও অনেক মূল্যবান হতে পারে,
তেমনই আমার জন্য এই সিগারেট
-
হইছে আর বলতে হবে না
.
হঠাৎ রাজ
খেয়াল করলো যে
রিতুকে দেখতে বেশ লাগছে
সুন্দর করেই সেজে এসেছে
.
জান্নাতের থেকে শুনেছে যে,
এই রিতু নাকি কোন এক ছেলের উপর ক্রাশ খেয়ে বসেছে
এই চুপচাপ মেয়ে ক্রাশ খাই ?
বিশ্বাস হয়না
.
-
সিগারেট টা ফেলে দাও গন্ধ ভালো লাগছে না
.
>
রিতুর কথায় বাস্তবে ফিরে এলো রাজ
.
>
ওদিকে রিহানের গানে মুগ্ধ সবাই
বিশেষ করে লাবণ্য
দারুণ একটা দিন গেল ওদের
*
>
নিচে নেমে আসতেই
ওরা চারজন হাটতে শুরু করলে
জান্নাত বলল,
-
কিরে রাজ
আজকাল দেখি লাবণ্যের সাথে
তোর বেশ খাতির হইছে মনে হয় মাঝে মাঝে কথা বলিস দেখি
.
>
কথাটি শুনেই
সাথে সাথেই রিহানের রাগী মুখ
রাজের দিকে ঘুরে গেল
রাজ তা দেখেই বলল,
-
আরে ধুর
কিছুই না তেমন মাঝে মাঝে কথা বলে জাস্ট
.
<>
রিতু কথার মাঝে
কি যেন ঠিক করার জন্য
রাজের হাতে তার ব্যাগ টা দিল কিন্ত নিতে ভুলে গেল
.
পরে বাসায় এসে
রিতু ফোন দিল,
-
রাজ ব্যাগ মনে হয় তোমার কাছেই রয়ে গেছে
-
সরি
আমিওদিতে ভুলে গেছলাম
-
ইটস ওকে
আমার ব্যাগ টা খুলো তো
একটা কাগজ আছে একটা নাম্বার লেখা আমাকে একটু ওটা মেসেজ করে পাঠিয়ে দাও না প্লিজ
খুব দরকার
.
-
বিএফ এর বুঝি ?
দিবো না
.
-
ধুর না রে
রাজ দাও তাড়াতাড়ি
.
রাজ রিতুর ব্যাগ থেকে
কাগজ টা বের করে মোবাইল হাতে নিলো
কিন্তু কিছু লিখতে পারলো না,
কারণ
কাগজে লেখা ছিল,
.
"
রাজ,
তোমার জন্য লিখছি অবাক হওয়ার কিছু নেই
সামনা সামনি কিছু বলতে পারবো না তাই লিখছি
আমি তোমাকে ভালোবাসি অনেক বেশী পছন্দ করি
জানিনা তুমি কাউকে পছন্দ করো কিনা জানতেও চাইনা
ভয় করে জানতে
কিন্তু তোমাকে অনেক বেশী ভালোবাসি .
.
>
রাজ অবাক হয়ে
লেখাটা পড়ছে
.
সাথে সাথেই রিতুকে টেক্সট দিলো আগামীকাল দেখা করার জন্য
**
<>
যাহক পরেরদিন,
রিতু দাঁড়িয়ে আছে একটা গাছের নিচে
কালো একটা ড্রেস পড়ে
বেশ মানিয়েছে বটে
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে
>
রাজ ওর আগে আসলেও
কিছুক্ষণ দাড় করিয়ে রেখে এগিয়ে গেল রিতুর ব্যাগ নিয়ে
এগিয়ে দিলো ওকে ব্যাগ
>
রিতু রাজের দিকে তাকাচ্ছে না লজ্জায়
কেউ কিছু বলছে না দেখে
রাজ বলে উঠলো,
-
কি সমস্যা ?
গতকাল কাগজ টাতে কি লেখা ছিলো রিতু ?
-
তুমি পড়ো নি ?
>
মাথা নিচে নামিয়ে রেখেই
পালটা উওর দিলো রিতু
*
>
সাথেই সাথেই
প্রায় রাজ তেলে বেগুনে জলে উঠলো,
-
ফাজলামু পেয়েছ?
এইসব কি ?
আমি তোমার থেকে এইসব আশা করিনি ছি
.
>
কথাটি বলেই রাজ
রিতুর সেই কাগজ পকেট থেকে বের করে দুমড়ে মুচড়ে মাটিতে ওর পায়ের কাছে ছুড়ে মারলো
রিতু এইসব খুব অবাক হয়ে গেল চোখে জল চিক চিক করতে লাগল
*
কিছু না বলে
রিতু নিজের ব্যাগ নিয়ে হাটা শুরু করলো এই বৃষ্টিতে
কাঁদছে
.
>
হটাত মাথার উপরে ছাতা নিয়ে রাজ এসে দাঁড়ালো
রিতু অবাক হয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে গেল
-
আমার উওর না শুনে যাচ্ছো কোথায় ?
-
মানে ?
(
রিতুর আরো অবাক)
-
তুমি সরাসরি বলো নি কেন ?
এটার জন্যই তো রাগ হলো খুব
আর কাদার কি আছে?
তোমার চোখে পানি মানায় না
I Love U Too
পাগলি
-
রিতু এবার রাজকে জড়িয়ে ধরলো
.
>
পরে রাজ নিজেই আবার ছাতা বন্ধ করে দিয়ে
রিতুর হাত ধরে হাটা শুরু করলো এই বৃষ্টিতে
মাঝে মাঝে কিছু মনের মানুষের সাথে বৃষ্টিতে ভিজলে কিচ্ছু হয়না
ভালোই লাগে তাদের হাত ধরে ভিজতে..
**

চলবে....
Blogger দ্বারা পরিচালিত.