আক্রোশ থেকেই হামলা চালায় ফয়জুর
জনপ্রিয় লেখক জাফর ইকবালের 'ভূতের বাচ্চা সুলেমান'- গ্রন্থ রচনার কারণেই তার প্রতি আক্রোশ ছিল হামলাকারী ফয়জুরের। এমনকি তাকে ইসলামের শত্রু বলেও মনে করত সে। আর এই আক্রোশেই তার ওপর হামলা চালায় ফয়জুর।
রোববার বিকেলে র্যাব-৯ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ এমন তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে কর্নেল আলী হায়দার আজাদ বলেন, ‘ফয়জুরের কাছ থেকে র্যাব বিভিন্ন ধরনের তথ্য পেয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল কাজ করছে। ইতোমধ্যে র্যাব তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।'
তিনি আরো বলেন, 'এ ধরনের হামলা কেউ একা করতে পারে না। তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদে ফয়জুর একাই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে বলে জানান তিনি।'
র্যাব কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ফয়জুর মাদ্রাসায় দাখিল পর্যন্ত পড়াশোনার পর আর পড়েনি। বিভিন্ন স্থানে সে কাজ করেছে।’
ব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান 'জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনায় মূল তদন্ত করবে পুলিশ। এজন্য হামলাকারী ফয়জুরকে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করা হবে। তবে র্যাব ছায়া তদন্ত করবে।
ফয়জুরের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে র্যাব।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়াস্থ ফয়জুরের বাড়ি থেকে জব্দকৃত কিছু ইসলামি বইসহ অন্যান্য আলামত র্যাবের একটি দল খতিয়ে দেখছে বলেও জানান আলী হায়দার আজাদ।
প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাব জানায়, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার কালিয়াকাপন গ্রামের হাফিজ আতিকুর রহমানের ছেলে ফয়জুর রহমান। তার বাবা সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক।
অন্যদিকে, ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন শাবির রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন।
রোববার বিকেল ৩টার দিকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুর রহমান।
ফয়জুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল সিলেট আসছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাফর ইকবালকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার রাত ১০টা ২৩ মিনিটের সময় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। বর্তমানে ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ট্রিপল-ই) বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাত করা হয়।