কেউ তোমাকে পছন্দ করবে এই আশায় নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলো না...তুমি যেমন আছ তেমনই থাকার চেষ্টা কর... যে তোমাকে সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসবে সে সত্যিকারের তোমাকেই ভালোবাসবে...

Definition List

স্বপ্ন বিভোর


<>>>>স্বপ্ন বিভোর<<<<>

- তুমি???
সাত সকালে ফোন দিয়েছ কেন?
- তার আগে বলো, 
ফোন ধরতে এত্ত লেট কেন? 
- ঘুমাচ্ছিলাম
- আস্ত একটা অলস কুমারী
- কিই???
- ঠিকি তো!
কয়টা বাজে এখন?
- ৯ টা
- মেয়েরা এতক্ষণ পযন্ত ঘুমায় নাকি?
- কিন্তু আমি ঘুমাই
তোমার সমস্যা?
- তুমি এত রেগে আছ কেন?
- ইচ্ছা হচ্ছে তাই
- এত রাগলে আর ঘুমালে 
তোমার তো বিয়েই হবেনা
- বিয়ে করলে তো হবে?
- কেন করবেনা?
- বিয়ে করলে তো আর এভাবে মজা করে ঘুমাতে পারবনা তাই
- ওরে ফাজিল মেয়ে!
যাও ওঠো
- উঠে কি করব?
- গিয়ে থালাবাসন মাজো,
রান্নার কাজে আন্টিকে সাহায্য করো 
- মা সব কমপ্লিট করে ফেলছে।
- তাহলে
নাস্তা করে কলেজে চলে এসো
- না যাবনা,
তোমার সাথে আর কখনও দেখাও করব না।কথাও বলবনা(রেগে) 
- কেন সোনিয়া?
- আজ আমার বাডডে,
আমার সব ফ্রেন্ড উইস করেছে,
অনেক কিছু গিফট্ করেছে,
কিন্তু তুমি
আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হয়েও এতক্ষণ পর্যন্ত.... Huuh
- প্লিজ সোনিয়া
আসলে হয়েছে কি...
- টুট টুট টুট
*
রাগ করে ফোনটা
কেটে দিলো সোনিয়া,..
*
কথা হচ্ছিল
মেঘ আর সোনিয়ার মধ্যে।
কলেজে দুজনে বেষ্টফ্রেন্ড... 
***
যাহক
পরে মেঘ
সোনিয়াকে একটা মেসেজ করল,
"সোনিয়া ১০ মিনিটের মধ্যে কলেজ ক্যান্টিনে আসো,
নইলে আমি আত্মহত্যা করবো "
.
>মেঘের
মেসেজেটা পেয়েও সোনিয়া একটুও
ব্যস্ততা দেখালো না।
নিজের
প্রয়োজনীয় কাজ গুলো সেরে তবেই
ক্যান্টিনে গেল।
.
>সোনিয়াকে দেখেই
মেঘ বলে উঠল,
- এত দেরি করলে কেন?
- আরে পাগল ছেলে
সাদা কাপড় খুজতে দেরি হল।
- মানে?
সাদা কাপড় কি করবে?
- আমি তো 
৪০ মিনিট পর এলাম।
ভাবলাম এতক্ষণে তুমি কুপোকাত..
তোমার মৃত্যুতে 
আমি মর্মাহত হইছি।
মানে হবো।
সেটা দেখানোর জন্য তো সাদা কাপড়
পড়তে হবে তাই।
.
>কথাটি শুনে
মেঘ তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল।
রেগে গেলে তারা আবার একে অপরকে তুই করে বলে।
তাই মেঘ বলল,
- দেখ সোনিয়া
একদম ফাজলামি করবিনা কুত্তি
- তুই ফাজলামি করবি না শালা।
প্রতি ২ দিন দিন পর
পর মরার শখ জাগে তোর তাইনা?
মর না মর।
কে আটকে রাখছে তোকে?
- হ্যা তাই তো। 
কেউ নাই আমার
কে আটকাবে?
.
>আবেগে
মেঘের চোখে কান্না চলে আসছে।
সোনিয়া সেটা বুঝতে পেরে
মেঘের হাত টেনে 
নিজের হাত
দিয়ে ওর চোখ মুছার চেষ্টা করলো।
আর বলল,
- আচ্ছা বাবুসোনা সরি। 
কান্না থামাও।
এবার বলো আমাকে ক্যান্টিনে ডেকেছ কেন??
- আমাকে কিছু টাকা ধার দিতে পারবে সোনিয়া?
- Ok কত টাকা?
- ২৫০০টাকা
- দেব বাট টাকা কি করবি মেঘ?
- তোমার সতীন, 
রিপার জন্য গিফট
কিনছি। 
কাল ওর বার্থ ডে।
কিনতে গিয়ে ২০০০ টাকা
কম পড়ছে।
দোকানদারকে ধার করে টাকা দিছি। তাই
টাকা লাগবে।
*
>কথাটা সোনিয়ার মনে 
খুব তীব্র ভাবেই
লাগলো।
রিপা হলো
মেঘের ক্লাসমেট।
মেঘের সাথে প্রায় কথা বলতে আসতে রিপা।
হয়ত প্রেমও করতে চায় মেঘের সাথে।
এজন্যে
রিপা আর মেঘকে একসাথে দেখলে,
সোনিয়ার খুব হিংসা হয়।
.
>আজ মেঘের মুখে
সতিন কথাটি শুনতেই, 
সোনিয়া রেগে মুখ লাল করে ফেলেছে।
যাহক রেগে বলল,
- হারামি কুত্তা
তোর কলিজা ছিড়ে খাবো।
খবরদার
আমার সাথে ফাজলামি করবি না।
আমার
স্বামী হবার নুন্যতম যোগ্যতা তোর
নাই।
- আহা!
সোনিয়া বিবি আমার রাগ করছে রে?
ও.... সতীনের কথা বলছি তাই?
- কুত্তা চুপ।
একদম চুপ।
- জ্বী আমার কুত্তি।
কুত্তি বললে তো কুত্তা চুপ থাকবেই।
- বেশি কথা বললে আমি চলে যাবো।
- না না না ম্যাডাম আমার।
আপনি গেলে আমাকে টাকা দেবে কে?
*
>সোনিয়া দীর্ঘশ্বাস
ফেলে খানিক চুপ থেকে বলল,
- দেখ মেঘ, 
আমি ওর কথা সহ্য করতে পারি
না। 
ঐ মেয়েকে বাদ দাও
- আমি বাদ দিতে পারছি না।
- কেন?
- মনে হয় রিপাকে আমি ভালবাসি
- কিইইই???
- হুম
- তুই কি মানুষ? (রেগে)
- মানুষ বলেই তো এত ভালবাসি ওকে।
- ও আচ্ছা খুব ভালো। বাসতে থাক।
বাই
.
- এইযে ম্যাম! 
কই চলে যাচ্ছেন?
.
সোনিয়া টাকা বের করে টেবিলে
রাখলো।
মলিন মুখে রেগে বলল,
- এই নে তোর ধারের 2500 টাকা।
আমাকে আর কল করবি না।
.
>সোনিয়া
খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে। 
মেঘ উঠে দাড়িয়ে সোনিয়াকে ডাকলো,
- এইযে ম্যাডাম
আপনি আপনার একটা
জিনিস ছেড়ে যাচ্ছেন।
*
>হঠাৎ করে 
সোনিয়া থেমে গিয়ে ব্যাগের
ভিতর দেখলো।
কি ছেড়ে গেছে বুঝতে পারলো
না।
.
>তাই
সে ফিরে এসে বললো।
- কই? কি? দে?
.
>মেঘের হাত পেছনে লুকিয়ে রাখা।
মেঘ হাসছে।
বিরক্তির কন্ঠে সোনিয়া বলল,
- দেখ কুত্তা 
মেজাজ খারাপ করাস না।
মাথা ফাটায় দেবো।
.
>গালি শুনে,
মেঘ আরো মজা নিতে লাগল।
.
>সোনিয়া
মুখে আরো বিরক্তি ফুটিয়ে বলল,
- দেখ,
আমার ভালো লাগছে না।
কি জিনিস
রেখে গেছি দে
.
>মেঘের মাথা নিচু।
সোনিয়া এবার
চিৎকার করে বলল
- কি হল তোর?
দিবি? 
নাকি আমি চলে যাবো।
ফালতু কোথাকার।
.
>মেঘ
মাথা নিচু করেই হাত
এগিয়ে দিয়ে মিনমিনিয়ে বলল,
- এই জিনিস টা ফেলে যাচ্ছিলি।
তাই ডাকছিলাম।
.
>মেঘের হাতে 
একজোড়া নুপুর আর দুল দেখে
সোনিয়া
অবাক কন্ঠে বলল,
- কার এগুলা?
- জ্বী আপনার।
আপনার জন্য কিনছিলাম।
কিনতে গিয়ে টাকা কম পড়ছে।
আর
আমি রিপাকে
ভালবাসিনা।
আপনাকে রাগাতে মিথ্যে বলেছি।
আপনার রাগী মুখ
না দেখলে আমার দিনটা ভাল কাটেনা।
.
>কথাগুলো শুনে
খুশিতে সোনিয়ার চোখে পানি চলে এসেছে।
সোনিয়ার চোখে পানি দেখে
মেঘের চোখেও পানি চলে এসেছে। 
>ভাবছে তার জন্যেই হয়তো
সোনিয়া কষ্ট পেয়েছে।
.
>সোনিয়া চোখের
পানি মুছে মুখে লুকানো হাসি নিয়ে সে
মেঘকে বলল,
- নে নে হইছে।
মেয়ের মত কাঁদতে হবে না।
এমন করে কাঁদিস, 
কেউ জানলে তোর
বিয়া দিতে সমস্যা হবে। 
পাত্রী পাবি না।
এবার চুপ কর। নুপুর আর দুল গুলা পড়ায় দে তো।
.
>চোখ মুছে মেঘ মুখ তুলল।
হাতে দুল নিয়ে
সোনিয়ার
কানে দুল পড়িয়ে দিতে দিতে বলল,
- আরে সমস্যা নাই
বিয়ে হবে না কেন?
পাত্রী না পেলে তুই কি জন্যে আছিস?
- ওরে বাবা!
কুত্তার সাহস কত!
- কুত্তির সাথে থাকতে থাকতে হইছে
আর কি!হেহেহেহে
- Huh(মুখ বাকা করে)
- বেকী
- কুত্তা
- হেহেহ কুত্তি
- চুপ।
ঐ তোমার সাথে রাগ করছি
কথা নেই
- কেন গো
- আমাকে এখনও
তুমি জন্মদিনের উইস করোনি
- করব
- কখন?
- সবার শেষে
- কেন?
- কারণ
শেষ ভাল যার,সব ভাল তার
- Huuh
দরকার নেই
- সত্যি?
- হ্যা
- ঠিক আছে
তাহলে রিপাকে গিয়ে উইস করব
- কিইইই?
- জী আজ্ঞে
- কুত্তা তোর এত্তবড় সাহস? 
(সোনিয়া এবার রাগ করে,
তার পায়ের হিলের সুচালো গোড়া গিয়ে, মেঘের বাম পায়ের ওপর,
জোরে গুতা মারল।
মেঘ ব্যথাতে চিৎকার দিয়ে পা তুলে,
মোরগ লড়াই খেলার মতো ঘুড়তে লাগলো।) 
.
- এবার ডান পায়েও ল্যাং মারব 
- এই না সোনিয়া
তাহলে আমি এবার আর দাড়িয়ে থাকতে পারবনা, গড়াগড়ি দিয়ে বাসাতে ফিরতে হবে। 
- তাহলে বলো রিপাকে উইস করবে? 
- জীবনেও না
- তাহলে?
- শুধু তো.তো.তো.তোমাকে
- ওকে করো
- Happy জন্মদিন শুভ
- ঐ ঠিক করে বলো
- হ্যাপি ভালবাসা ডে
- হোয়াট?
- না ইয়ে মানে হ্যাপি বাডডে
- হুম
তো হ্যাপি ভালবাসা ডে বললে কেন? 
- মুখ স্লিপ কেটেছে
- কুত্তা সত্যি করে বলো নতুবা ডান পায়ে আরেকটা দেবো 
- বলছি বলছি
- বলো
- বলছি কি
আজ তোমার বাডডের পাশাপাশি,
আমাদের দুজনের জন্যে লাভ ডে
- কিভাবে?
- এই যে আজ তোমার সাথে প্রেম করছি
- আহারে!
তো মহাশয় কে আপনার সাথে প্রেম করছে?
- এই যে তুমি!
কত্ত সুন্দর খুনসুটি করছ
- হুহহ
আমার তো বয়েই গেছে
- হুম
তো ম্যাডম
এবার জড়িয়ে ধরোতো
- আহাহা পার***বো***না
- সো..সো..সো.সোনিয়া
- এই কি হলো কাঁপতেছো কেন তুমি?
- তো.তো.তোমার পেছনে পাগলা কুকুর
- আ*****উ
.
(সোনিয়া ভয়ে লাফিয়ে উঠে পেছনের দিকে না তাকিয়ে
মেঘকে জড়িয়ে ধরলো।
আসলে পেছনে কুকুর ছিলনা, সব মেঘের চালাকি আর ফাকিবাজী)
.
যাহক পরে,
- সোনিয়া শক্ত করে জড়িয়ে ধরো
কুকুর এগিয়ে আসছে কামড় দিতে।
- সোনিয়া আরো জোরে জড়িয়ে ধরল
*
কিছুক্ষণ পর...
- মেঘ,
কুকুর চলে গেছে?
- আরে না যায়নি,
কুকুরের সাথে আমার আলাপ হয়েছে,
এক ঘণ্টা পর যাবে
- কি???
কুকুরের সাথে তো.তো.তোমার আলাপ!
- জী
জড়িয়ে ধরে থাকো
*
সোনিয়া
মেঘের চালাকি বুঝতে পেরে
বলল,
- এই ছাড়ো
শয়তান ছেলে ধান্দাবাজ!
আমার সাথে চালাকি?
দেখাচ্ছি মজা..
- উঊঊ সোনিয়া
কানটা ছাড়ো ব্যথা পাচ্ছি তো
- খুব দুষ্ট হয়ে গেছ তাইনা?
- ছাড়ো প্লিজ
- না ছাড়ব না
- এবার পেছনে দেখ
সত্যি সত্যি পাগল কুকুর আসতেছে।
- এহ!
আর ঠকতেছি না,
কানার লাঠি একবারই হারায়..
মনে করছ আবার জড়িয়ে ধরব?
আবার মিথ্যা বলে বোকা বানাবে?
- সত্যি পেছনে তাকিয়ে দেখ
- নো নেভার
যতই ফন্দি করো কান তোমার ছাড়ছিনা।
*
এবার কিছুদুরে
সত্যিই একটা কুকুর আসতেছিল।
কুকুরটি দুরে
থেকেই ঘেউ ঘেঊ করতেই,
সোনিয়ার যেন ভয়ে প্রাণ উড়ে গেলো।
এক লাফে
মেঘকে জড়িয়ে ধরল!
*
- আউ মেঘ বাচাও
- হোহোহো
গরিবের কথা বাঁসি হলেও মিঠা লাগে।
- প্লিজ কুকুর থেকে আমাকে বাচাও
- বাচাব এক শর্তে
- কি?
- আই লাভ ইউ বলতে হবে
- এহ! পারবনা
- ওকে তাহলে কুকুরকে ডাকছি
- আই লাভ ইউ, আই লাভ ইউ
- হাহাহা লাভ ইউ টু ভীতুরানি
*
পরে মেঘও
তার ভালবাসার মানুষ সোনিয়াকে জড়িয়ে ধরে স্বপ্ন বিভোরে,
বিভোর হয়ে পড়লো...

Story :  রিহান আহমেদ রাজ
Blogger দ্বারা পরিচালিত.