স্মার্টফোন আপনাকে চিনবে হার্টের মাধ্যমে !
আপনার স্মার্টফোনের নিরাপত্তায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, আইরিশ স্ক্যানার কিংবা ফেস স্ক্যানার প্রযুক্তির দিন বোধহয় শেষ হতে চললো। ডিভাইসের নিরাপত্তায় বিজ্ঞানীরা এবার উদ্ভাবন করেছেন হার্ট স্ক্যানার।
বায়োমেট্রিক পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা হিসেবে আঙুলের ছাপ, চোখের মনি বা মুখচ্ছবি শণাক্তকারী প্রযুক্তি এতদিন ব্যবহার হয়ে আসলেও খুব শিগগির ব্যবহার করা যাবে হৃদপিণ্ড শণাক্তকারী প্রযুক্তি। অর্থাৎ আপনার হার্ট বা হৃদপিণ্ড শণাক্তের মাধ্যমে আন-লক হবে ডিভাইস।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সিস্টেম প্রথমবার হার্টকে স্ক্যান করতে সময় নেবে ৮ সেকেন্ড এবং পরবর্তীতে মুহূর্তেই শণাক্ত করতে পারবে। এই প্রযুক্তিটি হার্টের শেপ, সাইজ ও হৃদস্পন্দনের ধরন সংরক্ষণ করে।
আপনার হার্টের মাধ্যমে আপনাকে চেনার প্রযুক্তিটি নিউ ইয়র্কের বাফোলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন কম্পিউটারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে। তবে প্রযুক্তিটি স্মার্টফোনের নিরাপত্তা এবং বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং কাজেও ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন।
বাফোলো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক এবং নিরাপত্তা প্রযুক্তিটির প্রধান গবেষক ড. ওয়েনইয়াও জু বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক কম্পিউটারের জন্য এটি ব্যবহার করতে চাই কারণ প্রত্যেকেরই গোপনীয়তা প্রয়োজন ...লগ-ইন এবং লগ-আউট খুবই বিরক্তিকর।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুজন মানুষের একইরকম হার্ট এখনো পর্যন্ত দেখা যায়নি। মানুষের হার্টের আকৃতি কখনো পরিবর্তন হয় না, যদি না তারা গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়।’

হার্ট-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক সিস্টেম প্রায় এক দশক ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে, তবে তা ইলেক্ট্রোড পরিমাপের জন্য ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম সংকেতের কাজে। এবার প্রথমবারের মতো বিজ্ঞানীরা হার্টের জ্যামিতিক বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করেছেন পরিচয় শণাক্তের কাজে।
এই সিস্টেমটি আপনার হার্ট পরিমাপ করতে নিম্ন স্তরের ডপলার রাডার ব্যবহার করে এবং সবসময় আপনার হার্টকে অবিরত পর্যবেক্ষণ করতে থাকে যাতে আপনি ছাড়া অন্য কেউ আপনার কম্পিউটার ব্যবহার করতে না পারে। বর্তমানে যেসব বায়োমেট্রিক সিস্টেম রয়েছে যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা রেটিনাল স্ক্যান, সেগুলোর তুলনায় অনেক বেশি সুবিধাপন্ন এই সিস্টেমটি।
প্রথমত, এটি হচ্ছে প্যাসিভ, নন-কনক্ট্যাক্ট ডিভাইস। ফলে ব্যবহারকারী যখন লগ-ইন করবে, তখন বার বার নিজের পরিচয় শণাক্তের ভোগান্তি পোহাতে হবে না। দ্বিতীয়ত, এটি ব্যবহারকারীকে ক্রমাগত নিরীক্ষণ করে। তার মানে, কম্পিউটার আপনি ব্যতীত অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। তাই ব্যবহারকারী যখন কম্পিউটার থেকে দূরে রয়েছে তখন লগ-অফ করার দুশ্চিন্তা করা লাগবে না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সিস্টেমটির সিগন্যাল ওয়াই-ফাইয়ের চেয়েও কম শক্তির, তাই স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হবে না। এর সিগন্যাল মাত্র ৫ মিলিওয়াটের, যা আমাদের স্মার্টফোন থেকে নির্গত রেডিয়েশনের এক শতাংশেরও কম।
ড. ওয়েনইয়াও জু বলেন, হার্ট স্ক্যানার সিস্টেমটি দ্রুত ডেভেলপ করবেন তারা এবং কম্পিউটারের কিবোর্ডের এক কর্ণারে স্থাপন করবেন।
অন্যদিকে বিমানবন্দরে পরিচয় শণাক্তের কাজের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে একটি ডিভাইস ৩০ মিটার দূর থেকে একজন ব্যক্তিকে নিরীক্ষণ করতে পারবে।
তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল
পড়ুন : মনে রাখতে হবে না পাসওয়ার্ড